প্রকাশিত: ৯:৩৩:০০ পূর্বাহ্ণ, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
এক হাজার টাকার নোট
লাস্টনিউজবিডি ৯ ডিসেম্বর: বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী ছয় মাসের মধ্যে ২০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের ডিজাইন পরিবর্তন করবে। নতুন ডিজাইনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকবে না, যা আগে ছিল বাংলাদেশি নোটে। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড সভায় এই সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
নতুন ডিজাইনে যুক্ত করা হবে দেশের ধর্মীয় স্থাপনা, বাঙালি ঐতিহ্য এবং ‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি’। এসব বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া হয়েছে এবং নতুন নোট ছাপানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, "আজকের বোর্ড সভায় নতুন ডিজাইনের নতুন নোট প্রচলনের বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান নকশা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে চারটি নোটের ডিজাইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। পরে ধাপে ধাপে দেশের সব ধরনের ব্যাংক নোটের ডিজাইন নতুন করা হবে। এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ নতুন নোটের বিস্তারিত নকশার প্রস্তাব জমা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়। তবে নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে মূল সুপারিশ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা ও নকশা উপদেষ্টা কমিটি। কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর-১। কমিটিতে চিত্রশিল্পীরাও রয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে টাকশালের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন শুধু টেন্ডার বাকি। টেন্ডারের কাজ শেষ হলে নতুন টাকা বাজারে চলে আসতে সময় লাগবে না।
বাংলাদেশের মুদ্রা ছাপানোর কাজটি করে দ্য সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড, যা টাকশাল নামে পরিচিত। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা পেলেও ১৯৮৮ সালের জুন মাসে এক টাকা ছাপানোর মধ্য দিয়ে এই প্রেসে নোট ছাপানো শুরু হয়। ওই বছরের নভেম্বর মাসে ১০ টাকার নোটও ছাপানো হয় সেখানে। প্রতিটি নোট ছাপানোর আগে তার নকশা অনুমোদন করে সরকার। সেজন্য দরপত্র ডেকে চিত্রশিল্পীদের দিয়ে নোটের নকশা করানো হয়।
নকশা চূড়ান্ত হলে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে কাগজ, কালি ও প্লেট তৈরি করা হয়। নকশা অনুযায়ী বিদেশ থেকে প্লেট তৈরি করে আনার পর ছাপার কাজটি করে টাকশাল।
বাংলাদেশ ব্যাংক সবসময় টাকা ছাপায় না। সাধারণত একটি নোট ৪-৫ বছর চলে। এরপর তা পুনর্মুদ্রণ করা হয়। ছোট মানের নোট বেশি হাতবদল হওয়ায় তা দ্রুত নষ্ট বা ব্যবহার অনুপযোগী হয়।
বছরের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা মুদ্রণ বা উৎপাদন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রেখে দেওয়া হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী সেখান থেকে যখন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বাজারে ছাড়া হয়, তখনই তা মুদ্রা বা টাকায় পরিণত হয়। তার আগে সেটি টাকা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মানি সার্কুলেশন প্রতিবেদনে যোগ করা হয় না।
বর্তমানে বাংলাদেশে ১, ২, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার ১০টি কাগুজে নোটের প্রচলন আছে। এর মধ্যে ২ থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত সব কাগুজে নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে নতুন নোট ছাপতে। তার আগের অর্থবছরে খরচ ছিল ৩৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছিল।
লাস্টনিউজবিডি/জে আই
সারাদিনের শিরোনাম এবং হাইলাইট, প্রতিদিন সকালে সরাসরি আপনার কাছে।
ইমেইল :
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
কপিরাইট © ২০২৫লাস্ট নিউজ বিডি